Header Ads

Header ADS

Education Suggestions || CBCS - Semester -5 || CU University || Part-1

Education Suggestions || CBCS - Calcutta University 

Education Suggestions || CBCS - Semester -5 || CU University || Part-1 






PART - 1 
Answer 

** ভালো হাতের লেখার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

ভালো হস্তাক্ষরের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Good Hand Writing)


ভালো হাতের লেখার কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। সেগুলি হল—


1. স্পষ্টতা (Clarity): লিখিত অক্ষরগুলি যেন স্পষ্টভাবে লেখা হয়। সাধারণত শিক্ষার্থীরা যুক্তবর্ণ লেখার সময় একই অসুবিধা বোধ করে। বর্তমান পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির বানান অভিধানে যুক্ত বর্ণগুলির একেবারে স্বচ্ছরূপ দেখানো হয়েছে। শিক্ষক ছাত্রদের এগুলি ঠিকমতো শিখিয়ে দেবেন। যুক্তবর্ণ ছাড়াও অন্য বর্ণগুলি ছাত্রছাত্রীরা যাতে ঠিকমতো লিখতে পারে সেদিকে পিতা-মাতা, অভিভাবক ও শিক্ষক সবাই নজর দেবেন।


2. সরলতা (Simplicity): জড়িয়ে অক্ষর লেখার প্রবণতা শিক্ষার্থীদের বাদ দিতে হবে। সহজ-সরলভাবে রেখাবিন্যাস করে অক্ষরগুলি লিখতে শেখাতে হবে। বিশেষ করে ক্ষ, জ্ঞ, ঞ্জ—এই যুক্ত বর্ণগুলি ছাত্ররা লিখতে পারে না বা জড়িয়ে এমনভাবে লেখে, যার কিছুই বোঝা যায় না। আবার লিখতে গিয়ে একটির সঙ্গে আর-একটি যেন জড়িয়ে না যায় তা দেখা খুব জরুরি।


3. সমতা বা সমরূপতা (Uniformity): প্রত্যেকটি অক্ষরের ছাঁচ বা Pattern ঠিক একরকম না হলেও লেখার সময় সেগুলি যাতে খুব ছোটোবড়ো না হয় তা দেখতে হবে। অক্ষরগুলি যেন সমরূপ বা সমান সাইজের হয় তা নজর রাখতে হবে। অস্বাভাবিক ছোটোবড়ো অক্ষর বিন্যাস হলে শুধু দৃষ্টিকটু হবে না, নির্দিষ্ট

পরিমাণ জায়গায়ও তা ধরানো যাবে না। সেজন্য ছোটোদের লেখার খাতায় খোপ খোপ করা থাকে।


4. ব্যবধান (Space): সবসময় নির্দিষ্ট Space রেখেই অক্ষরগুলি বসবে। শুধু অক্ষর নয় প্রত্যেকটি লাইনের মধ্যে যাতে যথাযথ Space রক্ষিত হয় সেদিকেও নজর দিতে হবে। আর সাদা কাগজে লেখার সময় যাতে লাইনগুলি বেঁকে না যায় সেদিকেও নজর দিতে হবে।


5. দ্রুততা (Speed): যথাসম্ভব দ্রুততার সঙ্গে লেখার অভ্যাস করানো জরুরি। আবার দ্রুত লিখতে গিয়ে অক্ষরগুলি যেন ঠিকমতো লেখা হয় সেদিকেও নজর দিতে হবে। অনেক সময় তাড়াতাড়ি লিখতে গিয়ে অনেক কিছুই বোঝা যায় না, এমনও দেখা গেছে।


6. যতি চিহ্নের যথাযথ প্রয়োগ (Proper use of Punctuation Marks) : লেখার সময় যাতে যতি চিহ্নগুলি ঠিক ঠিক জায়গায় বসে সেটা লক্ষ রাখতে হবে। এটি অবশ্য দীর্ঘ অনুশীলনসাপেক্ষ। আমরা অনেকেই যতিচিহ্নের সার্থক ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন নই। শিক্ষকের আন্তরিক প্রযত্ন ছাড়া এব্যাপারটি সহজে বোধগম্য করা সম্ভব নয়।


যাইহোক লেখার অক্ষরগুলি কেমনভাবে বিন্যস্ত হবে, তাদের ছাঁদ কেমন হবে এ পর্কে একটি সুন্দর সংস্কৃত উদ্ধৃতি আছে। সেটি এরকম—


সমানি সমশীর্ষাণি ঘনানি বিরলানি চ ।

অব্যাকুলিত মাত্রাণি যো বৈ লিখতি লেখকঃ ।।


অর্থাৎ অক্ষরগুলি হবে সমআকৃতি বিশিষ্ট, তাদের শীর্ষ বা উচ্চতা (Height) হবে =রূপ। তারা যেমন ঘনসন্নিবিষ্ট হবে, আবার তাদের মধ্যে থাকবে প্রয়োজনীয় দূরত্বও। খার মাত্রাগুলিও সমরেখায় থাকবে।


********************************************************

*******************************************************


সরব পাঠের উপযোগিতা (Facilities of Loud Reading)


1. সরব পাঠ বর্ণ ও শব্দের সঠিক উচ্চারণ করতে সাহায্য করে।

2. ছাত্ররা প্রাথমিক স্তর থেকে সঠিক উচ্চারণে দক্ষ হয়ে উঠতে পারে।

3. শিক্ষকের দেওয়া আদর্শ সরব পাঠ (Model Loud reading) শিক্ষার্থীদে উচ্চারণ শিক্ষায় যথেষ্ট সাহায্য করে। 

4. শিক্ষার্থীদের কাছে সরব পাঠ সব সময় আনন্দজনক ব্যাপার।

5. এটি শিশু প্রকৃতির সঙ্গে যথেষ্ট সামঞ্জস্যপূর্ণ।

6. সরব পাঠ শিশুদের প্রাণবন্ত করে তোলে।

7. ধ্বনিতত্ত্ব বোঝার পক্ষে যথেষ্ট সহায়ক হয়।

৪. সুস্পষ্ট উচ্চারণের মাধ্যমে পাঠের ত্রুটি সংশোধিত হয়।

9. এই পাঠ শিক্ষার্থীদের মনোযোগ আকর্ষণে সাহায্য করে।

10. পাঠে উৎসাহের সঞ্চার করে পাঠের দক্ষতাকে বাড়িয়ে তোলে।

11. সঠিক বাচনভঙ্গি ও কথন-শৈলী বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

12. স্পষ্ট ও শুদ্ধ উচ্চারণের মাধ্যমে ভাষাকে দ্রুত অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করে

13. উচ্চারণে আঞ্চলিকতা দোষকে দূর করতে সাহায্য করে।

14. শিক্ষার্থীদের অস্বাস্থ্যকর প্রবৃত্তিগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে প্রবৃত্তির উন্নয়ন ঘটাতে সাহায্য করে।

15. ছন্দ ও যতিচিহ্নগুলির যথাযথ ব্যবহারে দক্ষ করে তোলে। 



সরব পাঠের অসুবিধা (Disadvantages of Loud Reading)


সরব পাঠের ক্ষেত্রে কয়েকটি অসুবিধাও চোখে পড়ে। সেগুলি হল— 

1. সরব পাঠের জন্য বেশি সময়ের প্রয়োজন।

2. সরব পাঠে অতিরিক্ত শ্রমও ব্যয়িত হয়, ফলে শরীরে অবসাদ আসে। 

3. অন্যের পড়াশোনা, চিন্তাভাবনা ও কাজকর্মে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে।

4. হইচই গোলমালের মধ্যে ভুল উচ্চারণ ধরাও কষ্টসাধ্য ব্যাপার।

5. সমবেত সরব পাঠে ছন্দ ও যতিচিহ্নের ভুল ধরা যায় না। 

6. এতে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ সব সময় নাও থাকতে পারে।



*****************************

*****************************


নীরব পাঠ বলতে কী বোঝায়? এই পাঠের উপযোগিতাগুলি লেখো।


যে পাঠে কোনো রব বা ধ্বনি উৎপাদিত হয় না, তাকেই নীরব পাঠ বলে।


নীরব পাঠের উপযোগিতা (Facilities of Silent Reading): ভাষা শিক্ষা ক্ষেত্রে সরব পাঠের ভূমিকা থাকলেও জীবনের বহু বিস্তৃত ক্ষেত্রে নীরব পাঠেরই প্রয়োগ বেশি। নীরব পাঠেরও বহু উপযোগিতা আছে। 1. নীরব পাঠ মননশীলতার উপযোগী: চিন্তাশীল অধ্যয়ন, গবেষণা বা কোনো মৌলিক চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রে নীরব পাঠ যথেষ্ট প্রয়োজনীয়। মননশীল গদ্য, পদ্য বা প্রবন্ধ বুঝতে হলে ধীরে ধীরে পড়ে বুঝতে হয়। তাই মননশীল অধ্যয়নে নীরব পাঠের উপযোগিতা যথেষ্ট। ভাষা শিক্ষার প্রথম স্তরে সরব পাঠ থাকলেও মাধ্যমিক স্তর থেকে নীরব পাঠের শিক্ষা দিতে হবে। পাঠে কিছুতা দক্ষতা এলে নীরব পাঠের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। 2.অল্প সময়ে অনেক বেশি শব্দ পড়া যায়: নীরব পাঠের ক্ষেত্রে আমাদের চোখ পক্তি বরাবর একই রকম গতিতে অগ্রসর হয় না। মাঝে মাঝে চোখের গতির বিরাম ঘটে। একটি লাইনে সাধারণত চার বা পাঁচবার চোখের গতির বিরাম ঘটে। চোখ যখন চলতে থাকে তখন অর্থের উপলব্ধি হয় না, বিরতির সময় অর্থের উপলব্ধি হয়। অভ্যাসের দ্বারা নীরব পাঠের গতি বাড়ানো যায়। নীরব পাঠের গতি বাড়াবার অর্থই হল চোখের গতির বিরতির সংখ্যা কমে যাওয়া। অর্থাৎ এক টানে যত বেশি সংখ্যক শব্দ পড়ে ফেলার অভ্যাস হবে, ততই নীরব পাঠের গতি বৃদ্ধি পাবে। 3. মনোযোগ বা একাগ্রতার প্রয়োজন: নীরব পাঠকে সার্থক করে তুলতে হলে মনোযোগ ও একাগ্রতার বিশেষ প্রয়োজন। মনোযোগ একাগ্রতা ছাড়া কিছুতেই নীরব পাঠ ফলদায়ী হতে পারে না। আবার নীরব পাঠে ফাঁকি দেবারও সুযোগ খুব বেশি। 4. কর্ম সময়ে কোনো ধারণাকে অধিগত করতে সাহায্য করে: নীরব পাঠের সাহায্যে কোনো বিষয়বস্তু বা ধারণাকে অতি সহজে অধিগত করা যায়।


5. অকারণ শক্তিক্ষয় রোধ করে: সরব পাঠে মুখ ও বাগ্যন্ত্রের কাজ খুব বেশি হওয়ার ফলে কিছুক্ষণ পড়ার পর হাঁফিয়ে ওঠে। গা দিয়ে ঘাম ঝরে ও পিপাসার সৃষ্টি হয়। তুলনামূলকভাবে অধিক পরিশ্রমে অল্প লাভ হয়। নীরব পাঠ এই অকারণ শক্তিক্ষয় রোধ করে। 6. গ্রন্থাগার বা শ্রেণিকক্ষে নীরব পাঠ বাঞ্ছনীয়: গ্রন্থাগারে নীরব পাঠ একান্ত আবশ্যক। প্রত্যেক শ্রেণির ছাত্র গ্রন্থাগার ব্যবহার করে ও গ্রন্থাগারে বসে নানা বইপত্র পড়ে। সেখানে নীরব পাঠ ছাড়া উপায় নেই।


>>>>>>>>>>>>>>

<<<<<<<<<<<<<<



শ্রেণিকক্ষে দলবদ্ধ আলোচনার সুবিধাগুলি উল্লেখ করো।



শ্রেণিকক্ষে দলগত আলোচনার সুবিধা (Advantages of Group Discussion in Classroom) আলোচনা পদ্ধতি শিক্ষণ পদ্ধতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে পাঠদান করলে কতকগুলি সুবিধা পাওয়া যায়। এই সুবিধাগুলি হল— 1. সক্রিয়তা: আলোচনা পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। ফলে শিখন দীর্ঘদিন মনে থাকে। 2. সামাজিক গুণবিকাশে সহায়তা করে: শিক্ষার্থীরা দলবদ্ধভাবে বিষয়বস্তুর আলোচনায় অংশগ্রহণ করায় শ্রেণিকক্ষে এক বিশেষ ধরনের সামাজিক পরিবেশ গড়ে ওঠে। এই পরিবেশ বিষয়কেন্দ্রিক শিখনের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক গুণ বিকাশে সহায়তা করে। 3. স্বাধীন মতামত প্রকাশ: আলোচনা পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে নিজেদের মতামত প্রকাশ করার সুযোগ পায়, যা তাদের আত্মবিশ্বাস ও আত্মনির্ভরশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।


4. ভুল-ত্রুটি দূর করা: আলোচনা পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা সরাসরি অংশগ্রহণ করায় তাদের ভুল-ত্রুটিগুলিও সংশোধন করে নিতে পারে সহজেই। 5. শিক্ষক-শিক্ষার্থীর আন্তঃসম্পর্ক গড়ে ওঠে: এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী-শিক্ষক সম্পর্ক এবং শিক্ষার্থী-শিক্ষার্থী সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ফলে শিক্ষার্থীরা নিঃসংকোচে পাঠগ্রহণ করতে পারে। 6. শৃঙ্খলা: প্রত্যেক আলোচনার নিজস্ব কিছু কৌশল বা নিয়ম থাকে এবংআলোচনাকালে ওই নিয়ম শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে মেনে চলতে হয়। ফলেশ্রেণিশৃঙ্খলার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীদের জীবনেও শৃঙ্খলা গড়ে ওঠে। যে-কোনো শিক্ষণের মূল শর্ত হল শৃঙ্খলা। 7. স্থায়ীভাবে চারিত্রিক পরিবর্তন আনে: আলোচনা পদ্ধতি সঠিকভাবে পরিচালিত হলে শিক্ষার্থীদের স্থায়ীভাবে চারিত্রিক পরিবর্তন ঘটায়। যেমন—শিক্ষার্থীরা জড়তামুক্ত হয়, লজ্জাসংকোচ কাটিয়ে উঠতে পারে।



প্লেটোর শিক্ষাদর্শন (Plato's Philosophy of Education)

Ans:
প্লেটোর দর্শনচিন্তার সঙ্গে তাঁর শিক্ষাচিন্তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। তাঁর শিক্ষাদর্শন সম্পূর্ণভাবে আদর্শবাদ বা Idealism-এর উপর প্রতিষ্ঠিত। ব্যক্তির ব্যক্তিত্বকে পরিপূর্ণভাবে বিকশিত করা এবং সমাজ ও সমাজ পদ্ধতির উপযুক্ত করে গড়ে তোলা প্লেটোর শিক্ষার লক্ষ্য। প্লেটো শিক্ষাকে আত্মার উন্মেষকারী শক্তি হিসেবে দেখেছেন, পুথিগত বিদ্যার যোগফলরূপে দেখেননি। সক্রেটিসের মতো প্লেটোও দর্শনকে জীবনমুখী করতে চেয়েছেন। জীবনমুখী ধারণায় শিক্ষা কেবল জ্ঞান আহরণ নয়। প্লেটো মনে করেন, ব্যক্তিজীবনের নৈতিক আদর্শ তার ব্যক্তিত্বকে পূর্ণরূপে প্রকাশিত করবে। সেইসঙ্গে নিজেকে সমাজের জন্য উপযোগী করে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিদগণ গড়ে তুলবে। প্লেটো বাইরের কোনো বস্তুধর্মী প্রক্রিয়াকে শিক্ষা বলে অভিহিত করেননি। তিনি শিক্ষাকে ‘আত্মার’ (Soul) পুনর্বিন্যাসের প্রক্রিয়ারূপে বিবেচনা করেন। ‘Conversion' শব্দটিকে প্লেটো ‘শিক্ষা’ শব্দের একমাত্র সমার্থক শব্দ হিসেবে গ্রহণ করেন। অর্থাৎ তাঁর মতে শিক্ষা হচ্ছে একটা জন্মান্তরের প্রক্রিয়া যা ব্যক্তির অন্তরাত্মাকে একটি আদর্শের দিকে পরিচালিত করে। শিক্ষার মধ্য দিয়ে মানুষ তার আত্মার গতিপ্রবাহকে সৎ, আদর্শ পথে পরিচালিত করতে পারে। মনন শক্তির পূর্ণ বিকাশ ঘটাতে পারে। আর মননের মাঝেই মানুষ বেঁচে থাকে। প্লেটো আরও বলেন—শিক্ষা অন্ধচোখে দৃষ্টি নিয়ে আসা নয় বরং চক্ষুকে আলোর দিকে চালিত করা। শিক্ষার মাধ্যমে তিনি ব্যক্তির আত্মাকে নতুন আলোয় উদ্ভাসিত করতে চেয়েছেন। অর্থাৎ প্লেটোর মতে শিক্ষা হল মানুষের মধ্যে যেসব উৎকৃষ্ট গুণ বা Virtues নিহিত রয়েছে তাদের পূর্ণ প্রকাশ। শিক্ষা শুধু বুদ্ধিকে প্রদীপ্ত করে না, সমগ্র আত্মাকে যথাযথ পথে চালিত করে। আর সমাজব্যবস্থার উন্নতি করতে হলে অবশ্যই ব্যক্তিজীবনের নৈতিক মানকে উন্নত করতে হবে। প্লেটোর ভাববাদী দর্শন (Idealist Philosophy of Plato)

প্লেটো ছিলেন গ্রিসের ভাববাদী দার্শনিক। তিনি সক্রেটিসের শিষ্য ছিলেন। সক্রেটিসের নিজের কোনো রচনার কথা জানা যায় না। কিন্তু প্লেটো সক্রেটিসকে নায়ক করে বিপুল সংখ্যক সংলাপমূলক দার্শনিক গ্রন্থ রচনা করেন। এই সমস্ত গ্রন্থের মধ্যে রিপাবলিক লজ, অ্যাপোলজি, ক্ৰিটো, ফিডো, পারমিনাইডিস, থিটিটাস প্রভৃতি সংলাপের নাম বিশেষ বিখ্যাত। প্লেটোর পূর্ববর্তী গ্রিক দার্শনিকদের দর্শন ছিল প্রধানত প্রকৃতিবাদী। সে দর্শনে বস্তুত সত্যতা সম্পর্কে কোনো সন্দেহ প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু প্লেটো তার পূর্ববর্তী দার্শনিকদের বস্তুবাদী ব্যাখ্যাকে সমালোচনা করে ভাববাদী তত্ত্ব তৈরি করেন। তাঁর মতে দৃশ্য জগতের বস্তু সত্য নয়। দৃশ্য বস্তু হচ্ছে সেই ভাবের প্রকাশ। ভাব হচ্ছে অবিনশ্বর এবং অতীন্দ্রিয়। মূলসত্তা-রূপ ভাবের কোনো সৃষ্টি কিংবা ক্ষয় নেই। স্থান এবং সময়ের উপরও সে নির্ভর করে না। এই ভাবকে প্লেটো আবার বিশ্বের আত্মা বলেও অভিহিত করেছেন। এই বিশ্বআত্মার খণ্ড প্রকাশ ঘটে ব্যক্তির আত্মার মধ্যে। সাংস্কৃতিক ভাববাদ (Cultural Idealism) | সংস্কৃতিভিত্তিক ভাববাদ (Cultural Idealism) মানব সংস্কৃতিকে মানুষের সৃজনশীল | প্রতিভার মহত্তম প্রকাশ বলে চিহ্নিত করেছে। মূলত প্লেটোর ভাবনায় এই সংস্কৃতিভিত্তিক ভাববাদ পুষ্ট হয়েছে। এই সংস্কৃতিভিত্তিক ভাববাদী দার্শনিক হিসেবে সক্রেটিস, প্লেটো, দেকার্ত, হেগেল, স্পিনোজা প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। শিক্ষার প্রাঙ্গনে অন্যান্য অনেক দার্শনিকের মতো প্লেটো এই ভাববাদকে প্রয়োগ করলেন।

>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>

@@@@@@@@@@@@@@@

বয়স্তর অনুযায়ী রুশোর শিক্ষাচিন্তার সংক্ষিপ্ত বিবরন দাও

উত্তরঃ
বয়ঃস্তর অনুযায়ী শিক্ষার লক্ষ্য (Aims of Education at Different Stages) রুশো মানবজীবন বিকাশের বয়ঃস্তর অনুযায়ী শিক্ষাজীবনকে চারটি স্তরে ভাগ করেন। আর প্রতিটি স্তরে পৃথক লক্ষ্যের ইঙ্গিত দেন। 1. প্রথম স্তর (0-5) শৈশব (Infancy) গ্রাম্য জীবনের সরল পরিবেশে প্রকৃতির অকৃপণ দাক্ষিণ্যের মধ্যে শিশু বেড়ে উঠবে। প্রকৃতি থেকে রস আহরণ করে বিরুদ্ধ শক্তির সঙ্গে লড়াই করে শক্ত হয়ে গড়ে উঠবে। আঘাত বা ব্যথা—যা কিছুই পাক, তবু প্রকৃতির কাছ থেকেই হোক তার শিক্ষা। শিশু নিজের চেষ্টায়, নিজের কৌতূহলের বশে শিখুক। এই স্তরে শিক্ষার লক্ষ্য—বাধাহীন স্বাভাবিক বিকাশ, ছাঁচে ফেলে গড়া নয়। শিশুর প্রথম স্তরের শিক্ষা হবে দৈহিক, মানসিক নয়। তার দেহটি সুস্থ, সবল, কষ্টসহিষ্ণু হয়ে গড়ে উঠবে। এই স্তরের শিক্ষা সম্পূর্ণ নেতিবাচক—যার উদ্দেশ্য শিশুর শক্তি, বুদ্ধি ও সংস্কারকে অবারিত ও অবিকৃত রাখা। জীবনসংগ্রামে জয়ী হওয়ার জন্য প্রকৃতির সুন্দর ও ভয়ংকর উভয় রূপের সঙ্গেই সে পরিচিত হবে। খেলার জিনিস হবে ফুল-ফল শোভিত গাছের ডাল বা কাঠের খেলনা ইত্যাদি। সোনা-রুপা বা স্ফটিকের দামি খেলনা নয়। 2. দ্বিতীয় স্তর (5-12) বাল্যকাল (Childhood) বাল্যকাল নেতিবাচক শিক্ষার কাল। নেতিবাচক শিক্ষা মানে শিশুর শিক্ষার প্রয়োজন নেই। তা নয়। বাল্যকালে বালকের সতেজ ইন্দ্ৰিয়গুলিকে সজাগ ও কৌতূহলী করে গড়ে তোলা যার দ্বারা সে পরবর্তী কালের শিক্ষার জন্য নিজেকে তৈরি করবে। প্রকৃতিই শিক্ষা দেবে শিশুকে প্রাকৃতিক ও নৈতিক নিয়মের অমোঘতা। বাইরের শাসন দিয়ে নয়, স্বীয় কৃতকর্মের ফলভোগ করে যে শিক্ষা, তাই সত্য শিক্ষা। বালকের অভিজ্ঞতাই হবে তার শিক্ষক। শিক্ষার লক্ষ্যে রুশো কাজের ফলাফলের ভিত্তিতে নৈতিক চরিত্রগঠনের কথা বলেন। বাইরের নিষেধের দ্বারা প্রভাবিত না-হয়ে বালক নিজেই জীবন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে নিজেকে সংযত করবে। এই সময়েও তাকে কোনো পুথিপত্র দেওয়া হবে না। বাল্যকালে বালকের দেহকে সবল ক্রিয়াচঞ্চল করে তুলতে হবে। সাঁতার, দৌড়ঝাঁপ, লাফ, গাছে চড়া, দেওয়াল ডিঙোনো ইত্যাদি কাজে উৎসাহ দিতে হবে। এই সময়ের শিক্ষার লক্ষ্য বালককে শক্ত করে গড়ে তোলা। Locke একেই বলেন, 'the hardening process' |
3. বয়ঃসন্ধির স্তর (Adolescence) বয়ঃসন্ধিকালকে রুশো দু-ভাগে ভাগ করেন বয়ঃসন্ধির প্রাথমিক স্তর (12-15) Early adolescence, বয়ঃসন্ধির শেষ পর্যায় (15-20 ) Late adolescence। এই স্তর বিদ্যা অর্জনের উপযুক্ত কাল। রুশো বয়ঃসন্ধিকালকে বলেন— “পরিশ্রম, শিক্ষাগ্রহণ ও অধ্যয়নের কাল।” বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর দেহমন প্রাণপ্রাচুর্যে ভরে ওঠে। তাই এই সময়ে শিক্ষার লক্ষ্য স্বাধীন চিন্তাশক্তির উন্মেষ ঘটানো—বিদ্যার ভারে শিক্ষার্থীকে সমাধিস্থ করা নয়। তাকে শেখাতে হবে এমন বিদ্যা যা কাজে লাগবে- merely that which is useful” | এই স্তরের শিক্ষার উদ্দেশ্য বৃত্তিশিক্ষার মধ্য দিয়ে সামাজিক শিক্ষা শুরু করা। সে শিখবে সহযোগিতা, শ্রমবণ্টন নীতি ও অর্থনীতির প্রধান সূত্রগুলি। নীতিশিক্ষা সম্বন্ধে শুধু একটি কথাই তাকে শিখতে হবে তা হল—কারও ক্ষতি করো না, অন্যায় আঘাত দিয়ো না (Never hurt anybody ) । যৌবনাগম বা বয়ঃসন্ধিকাল জীবন বিকাশের বিশেষ সংকটপূর্ণ স্তর। এটি অতীব তাৎপর্যপূর্ণ সময়—অনুভূতি, সমাজবোধ ও নীতিজ্ঞান বিকাশের কাল। এই স্তরেই শিখতে হবে হৃদয়াবেগ নিয়ন্ত্রণের উপায়। নীতি ও ধর্মের কথা। বয়ঃসন্ধিকালে শিক্ষার উদ্দেশ্য হল চরিত্রগঠন। এ সময় ব্যক্তির অনুভূতিগুলিকে ঔদার্য ও কল্যাণমুখী করে তুলতে হবে। আর তা শিখবে মানুষের দুঃখ-বেদনা ও মহত্ত্বের সংস্পর্শে এসে। উপদেশ বা বক্তৃতা দিয়ে অনুভূতির শিক্ষা সম্ভব নয়। প্রত্যক্ষ মানবিক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়েই শিক্ষার্থী মানুষকে সম্মান করতে শিখবে, শিখবে ভালোবাসতে। আর বয়ঃসন্ধিকালেই এ সত্য শিক্ষা করবে যে, মানুষ মূলত সৎ, কিন্তু সমাজের কৃত্রিম ব্যবস্থাই তাকে কলুষিত করে। 4. নারীশিক্ষা (Education for Women) নারীশিক্ষা প্রসঙ্গে রুশো বলেন, সংসার ও গৃহপরিবেশই তার শিক্ষার ক্ষেত্র। তার শিক্ষার শ্রেষ্ঠ উদ্দেশ্য হল স্বামীর আদর্শ গৃহিণী হওয়া। স্বামীকে সুখী করাই রুশোর মতে, নারীশিক্ষার একমাত্র লক্ষ্য। রুশো নারীকে বৌদ্ধিক শিক্ষায় উন্নত হওয়ার কোনো পরিকল্পনা দেননি। রুশো নারীর উচ্চশিক্ষার কোনো প্রয়োজন স্বীকার করেননি। তিনি নারীস্বাধীনতার বিপক্ষে ছিলেন। তিনি বলেন, নারীদের নিয়ন্ত্রণে রেখে বিবাহিত জীবনের সহায়ক শিক্ষাদান করাই নারীশিক্ষার লক্ষ্য। রুশোর নারীশিক্ষার ধারণা আধুনিককালে অচল। তাঁর নারীশিক্ষা সম্পর্কীয় মতবাদ আজ পরিত্যক্ত।


>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>


 *** শিক্ষাক্ষেত্রে মন্তেসরির অবদান


 শিক্ষাক্ষেত্রে মন্তেসরির অবদান

(Contribution of Montessori in Education) সমালোচকরা বলেন, মন্তেসরি পদ্ধতি প্রাথমিক পেশি ক্রিয়া ও ইন্দ্রিয় শিক্ষার উপর বড়ো বেশি জোর দেন। কল্পনাশক্তির বিকাশ শিশুমনের অপরিহার্য গুণ। এই গুণের চর্চাকে তিনি উপেক্ষা করেছেন। এসব সমালোচনা সত্ত্বেও একথা বলা যায়, মন্তেসরি শিক্ষাপদ্ধতি আধুনিক শিক্ষাকেন্দ্রিক শিক্ষায় নব দিগন্তের সূচনা করেছে। আজ সারা বিশ্বে এ শিক্ষাপদ্ধতি বহুল প্রচলিত—প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বস্তুনিষ্ঠ, যুক্তিনিষ্ঠ এবং মনোবিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি।
সর্বস্তরের শিক্ষায় স্বাধীনতা, স্বতঃস্ফূর্ততা, সক্রিয়তা ও স্বয়ংসম্পূর্ণতার প্রয়োজন তিনি উপলব্ধি করেন এবং সর্বশিক্ষা ক্ষেত্রে তা সুপারিশ করেন। মন্তেসরি শিক্ষা পরিকল্পনা বর্তমান জীবনমুখী শিশু শিক্ষার ইতিহাসে এক স্বর্ণোজ্জ্বল অধ্যায়।

মন্তেসরির মতে, কোনো কিছু শেখার পেছনে প্রত্যেক শিশুর সহজাত প্রবৃত্তি ও প্রবল আগ্রহ কাজ করে। তিনি এটি একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। শিক্ষক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব প্রাকৃতিক নিয়ম মেনেই শিশুদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা। শিশুদের মনস্তাত্ত্বিক বিন্যাস  করে মন্টেসরি ক্লাসরুমের ডিজাইন করা হয়। সেখানে শিশুদের পূর্ণ স্বাধীনতার ব্যবহার, যোগ্যতা অর্জন ও ব্যক্তিত্ব বিকাশের প্রতি নজর দেওয়ার হয়। এখানে শিশুদের পছন্দমতো পাঠ ও পাঠের পরিধি নির্বাচন, কোনো ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও দায়িত্ব গ্রহণের স্বাধীনতা দেওয়া হয়। মন্তেসরি শিক্ষাব্যবস্থায় প্রত্যেক শিশু কোনো কিছু শেখার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত আগ্রহকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে তারা নিজেদের নিজস্ব ভরাবেগ, আগ্রহ ও কৌতুহলবোধকে অনুসরণ করে। সুশৃঙ্খল শ্রেণিকক্ষ, যথাযথ গাইডলাইন ও প্রাপ্ত স্বাধীনতা ও দায়িত্ববোধের ভারসাম্যের মধ্য দিয়ে শিশুদের মানসিক, শারীরিক ও সামাজিক ও সামাজিক বিকাশ ঘটে। প্রাথমিক পর্যায় থেকে শিশুদের সময়ের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয় সমূহের উপর বারংবার ধারণা প্রদান করা হয়। প্রতিটি পুনরাবৃত্তির সঙ্গে সঙ্গে একটি নতুন তথ্য বা জটিল বিষয় যুক্ত করে দেওয়া হয়, যাতে করে শিশুরা সুস্পষ্ট ধারণা ও বিস্তৃত জ্ঞান লাভ করতে পারে। এভাবে করে শিশুরা ক্রমাগত তাদের দক্ষ করে তোলে। একই সঙ্গে প্রক্রিয়াটি শিশুদের অন্তর্দৃষ্টি প্রসারিত করে, নতুন কিছু আবিষ্কার ও সুদৃঢ় আত্মবিশ্বাসের দিকে পরিচালিত করে।



>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>


বুনিয়াদি শিক্ষার বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Basic Education)

• 7 থেকে 14 বছর পর্যন্ত সমস্ত ছেলেমেয়েদের জন্য সর্বজনীন, বাধ্যতামূলকও অবৈতনিক শিক্ষা। • এই স্তরে ইংরেজি শিক্ষা দেওয়া হবে না, এখানে মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া হবে। • শিক্ষার্থীদের সামর্থ্য ও স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী কোনো একটি নির্দিষ্ট শিল্পকে কেন্দ্র করে সমস্ত শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালিত হবে। বুনন বা হাতে কাটা সুতা, চামড়ার কাজ, কাঠের কাজ, সেলাই, কৃষি, বাগান তৈরি, মৎস্য চাষ প্রভৃতিকে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। • এই সমস্ত শিল্পকে কেন্দ্র করে তারা অর্থ উপার্জন করবে এবং নিজেদের শিক্ষার ব্যয় তারা নিজেরাই বহন করবে। এখানে গান্ধিজি অনুবন্ধ প্রণালীতে শিক্ষা দেওয়ার কথা বলেছেন। * পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্য ও নাগরিকতা শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হবে। • যতদূর সম্ভব পাঠ্যপুস্তককে পরিহার করতে হবে। বুনিয়াদি শিক্ষা কেবলমাত্র শিশুদের শিক্ষার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। পিতা মাতার শিক্ষাও অন্তর্ভুক্ত হবে। প্রাপ্তবয়স্ক, স্ত্রীলোক এবং হরিজনদের শিক্ষাও অন্তর্ভুক্ত হবে। • বাহ্যিক মূল্যায়নের পরিবর্তে দৈনন্দিন কার্যাবলির প্রেক্ষিতে অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন হবে। বুনিয়াদি শিক্ষার কাঠামোয় চারটি স্তর থাকবে—(ক) প্রাক্-বুনিয়াদি স্তর (সাত বছরের পূর্ব পর্যন্ত), (খ) জুনিয়র বেসিক স্তর (সাত থেকে দশ বছর), (গ) সিনিয়র বেসিক স্তর (এগারো থেকে চোদ্দো বছর), (ঘ) পোস্ট বেসিক স্তর (চোদ্দো বছরের পর)।










No comments

Featured Post

Semester 2 History Suggestions - Questions Set-1 -স্নাতক ইতিহাস || History General Semester 2 - || History Suggestion for 2nd Semester of Calcutta University under CBCS System

   History  Suggestion for 2nd Semester of Calcutta University under CBCS System  History   Suggestions( BA General )  with Answer  Semester...

Powered by Blogger.