Header Ads

Header ADS

History Suggestion for Fifth Semester of Calcutta University under CBCS System History Suggestions( BA General ) with Answer

History  Suggestion for Fifth Semester of Calcutta University under CBCS System 

History  Suggestions( BA General )  with Answer 

ইতিহাস সাজেশন










Semester 5 History - CBCS 

 


>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>


 নেপোলিয়ন বোনাপার্টের আভ্যন্তরীণ সংস্কার সমূহের আলোচনা কর। সংস্কারগুলিতে ফরাসী বিপ্লবের আদর্শ কতটা প্রতিফলিত হয়েছিল ?


ভূমিকা : ফ্রান্সের প্রবাদপুরুষ নেপোলিয়ন বোনাপার্ট কেবলমাত্র সুযোদ্ধাই ছিলেন না, সংস্কারক। হিসাবে ও তিনি ছিলেন অনন্য কৃতিত্বের অধিকারী। তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময়ই ব্যয়িত হয়েছে। যুদ্ধবিগ্রহের মধ্যে। একসাথে তিনি লড়াই করে গেছেন ইউরোপের ৪/৫ টি বৃহৎ শক্তির বিরুদ্ধে। কিন্তু তার মাঝেও তিনি সৃজনশীল সংস্কারক হিসাবে নিজ কর্তব্য পালন করে গেছেন। তার সংস্কারের লক্ষ্য। ছিল বহুমুখী। ফ্রান্সকে সামাজিক, অর্থনৈতিক, ধর্মনৈতিক দিক থেকে উন্নত ও আত্মনির্ভরশীল করে তোলার জন্য একক প্রয়াস চালিয়ে গিয়েছেন। বিপ্লব-বিধ্বস্ত ফ্রান্সকে একটি স্থায়ী প্রশাসন দান করা এবং দেশের অস্থির ও অনিশ্চিত অর্থনীতি ও সমাজ জীবনকে স্থিরতা এবং নিরাপত্তাদান করাই ছিল তাঁর সংস্কার কার্যাবলীর প্রধান লক্ষ্য।


প্রশাসনিক সংস্কার : প্রথমেই নেপোলিয়ন আভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক পুনর্গঠনের দিকে নজর দেন। ইতিপূর্বে সমগ্র দেশকে ৮৩ টি ডিপার্টমেন্টে ভাগ করা হয়েছিল, অধিকাংশ কর্মচারী আসতেন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। কিন্তু এর ফলে দ্বিবিধ ত্রুটি দেখা দিয়েছিল। অতিবিকেন্দ্রীকরণের ফলে প্রশাসন অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়েছিল এবং নির্বাচনের দ্বারা কর্মী নিয়োগের ফলে যোগ্যতা বা দক্ষতার প্রকৃত মূল্য ছিল না। নেপোলিয়ন. ডিপার্টমেন্টগুলি বহাল রাখেন তবে স্থানীয় কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্বাচনের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় মনোনয়নের রীতি চালু করেন। প্রত্যেক ডিপার্টমেন্টের ভার দেওয়া হয় একজন ‘প্রিফেক্ট' কে। প্রিফেক্টরা প্রথম কনসাল কর্তৃক মনোনীত হতেন। স্থানীয় নির্বাচিত পরিষদগুলি কেবল পরামর্শদাতা সংস্থায় পরিণত হয়। কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থায় সমস্ত ক্ষমতার কেন্দ্র ছিল প্রথম কনসাল। বলাবাহুল্য এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন স্বয়ং নেপোলিয়ন। এই সব সংস্কারের ফলে প্রাচীন আমলের কেন্দ্রীভূত শাসনব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তিত হয়েছিল। প্রদেশে প্রিফেক্টগণ ছিলেন সমস্ত ক্ষমতার অধীশ্বর। অনেকের মতে, প্রিফেক্টগণ পুরানো ব্যবস্থায় ইনটেনড্যান্টদের মতই একই ক্ষমতার অধিকারী হয়েছিল।


সমন্বয় নীতি : ফ্রান্সের পুরানোপন্থীদের সঙ্গে বিপ্লবীদের যে মানসিক সংঘাত শুরু হয়েছিল তার ফলে দেশের আভ্যন্তরীণ উন্নয়ন বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিল। এই পরিস্থিতির সমাধানকল্পে নেপোলিয়ন সামঞ্জস্যবিধান নীতি গ্রহণ করেন। ক্ষমাপ্রদর্শন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও সাহায্য এবং পুনবার্সনের নির্দেশ দান করে নেপোলিয়ন দেশত্যাগী ও বিপ্লব বিরোধীদের নতুন সরকারের প্রতি আস্থাশীল করে তোলেন।


আর্থিক সংস্কার : নেপোলিয়ন যখন প্রথম কনসাল নিযুক্ত হন, সে সময় ফ্রান্সে যে সব সমস্যা প্রবল আকার ধারণ করেছিল, তার মধ্যে প্রধান ছিল আর্থিক সমস্যা। নেপোলিয়ন ক্ষমতায় এসে আর্থিক ব্যবস্থাকে একেবারে ঢেলে সাজান। তিনি সরকারী দপ্তর গুলিকে ব্যয়সঙ্কোচের নির্দেশ দেন। তিনি স্বয়ং সরকারী বাজেট পরীক্ষা করে বিভিন্ন খাতে ব্যয়ের হার নির্দিষ্ট করে দেন। তিনি বিভিন্ন প্রকার বাড়তি কর রহিত করে কয়েকটি নির্দিষ্ট করের উপর জোর দেন। কর প্রদান করা নাগরিক কর্তব্য এই শিক্ষা প্রচারের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেন, প্রত্যক্ষ করের তুলনায় পরোক্ষ করের প্রতি নেপোলিয়ন বেশী আগ্রহ দেখান। লবণ ও সুরার উপর পরোক্ষ কর আরোপ করেন।


ব্যাঙ্ক অফ ফ্রান্স গঠন : কর আদায়ের ব্যাপারে প্রাদেশিক সভাগুলির কর্তৃত্ব বিলোপ করা হয়। কর আদায়ের জন্য প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট একজন করে রিসিভার্স জেনারেল' নামক সরকারী কর্মী নিযুক্ত করা হয়। এদের অধীনে থাকত কিছু সংখ্যক নিম্নপদস্থ কর্মচারী। নেপোলিয়ন ইংল্যান্ডের অনুকরণে ‘ব্যাঙ্ক অব ফ্রান্স' প্রতিষ্ঠা করেন। এই ব্যাঙ্ক থেকে শতকরা ৬ ফ্রাঁ সুদে ঋণ দানের ব্যবস্থা করা হয়। ১৮০৩ সালে ব্যাঙ্ক নোট প্রচলনের দায়িত্বও ব্যাঙ্কের উপর অর্পিত হয়। এই সব সংস্কারের ফলে ফ্রান্সে আর্থিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসে।


আইন বিধির সংস্কার : নেপোলিয়নের সংস্কারগুলির মধ্যে অন্যতম প্রধান ছিল আইন বিধির প্রবর্তন।

ফরাসী আইন বিধিবধ্য করার দুরূহ ও জটিল কাজ নেপোলিয়ন সম্পূর্ণ করেন। বিপ্লবের পর ফ্রান্সে বহু নতুন আইন চালু হয়। আবার বুরবো আমলের বহু আইনও প্রচলিত ছিল। সেইসঙ্গে বহু স্থানীয় আইন ও যাজকীয় আইনও বহাল ছিল। এই জটপাকানো আইন ব্যবস্থাকে সুসংহত, সুবিন্যস্ত, সমঞ্জস্যপূর্ণ ও জটিলতা মুক্ত করার জন্য নেপোলিয়ন রাষ্ট্রীয় পরিষদকে নির্দেশ দেন। আইন সংহিতা প্রনয়ণের জন্য এই পরিষদের ৮৫ টি অধিবেশন হয়। অবশেষে ২২৮৭ টি ধারা সমন্বিত 'আইন সংহিতা' রচিত হয়। নেপোলিয়নের নামানুসারে এর নাম হয় 'কোড অফ্ নেপোলিয়ন' বা নেপোলিয়নের আইনবিধি ।


সাম্যের স্বীকৃতি : এই আইন সংহিতার তিনটি অংশ ছিল, যথা- দেওয়ানী, ফৌজদারী ও বাণিজ্যিক আইনবিধি। নতুন ফরাসী সমাজের বাইবেল হিসাবে গণ্য এই আইন সংহিতায় ব্যক্তি স্বাধীনতা, আইনের দৃষ্টিতে সমতা, ধর্মনিরপেক্ষতা, বিবেকের স্বাধীনতা ও জীবিকার স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। রেজিষ্ট্রী বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদ বৈধ বলে ঘোষিত হয়। অবশ্য এর কয়েকটি সহজাত ত্রুটিও ছিল, যেমন— মুক্ত অর্থনীতির স্বার্থে শ্রমিকদের সংঘবদ্ধ হওয়া নিষিদ্ধ ছিল। পুরুষের তুলনায় নারীর অধিকার অনেকটা ২৮ সংকুচিত করা হয়। তবুও বলা যায় এই আইনবিধির কোন জুড়ি ছিল না। প্রাকৃতিক আইন ও রোমান আইনের সমন্বয়ে গঠিত এই আইন বিধি ফ্রান্সের সীমানা অতিক্রম করে ইউরোপের বহু দেশে স্বীকৃতি লাভ করে।


ধর্মীয় সংস্কার : নেপোলিয়ন মনে করতেন জনসাধারণের ধর্মের প্রয়োজন আছে। তাই বিপ্লব পরবর্তীকালে চার্চের সাথে রাষ্ট্রের যে সংঘাত শুরু হয়েছিল, তা প্রশমিত করতে নেপোলিয়ন উদ্যোগী হন। ধর্ম বিষয়ক মীমাংসাকে তিনি রাজনৈতিক প্রয়োজনীয়তার দিক দিয়ে বিচার করেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন ধর্মীয় বিচ্ছেদের অবসান ঘটাতে পারলে আভ্যন্তরীণ সংহতি সুদৃঢ় হবে। সেই সঙ্গে পোপ ও চার্চ রাজতন্ত্রের দিক দিয়ে সরে আসবেন। ১৮০০ খ্রীঃ নতুন পোপ হন নবম পীযূস। ব্যক্তি হিসাবে তিনি ছিলেন অমায়িক। ১৮০১ খ্রীঃ পোপও নেপোলিয়নের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যা ধর্মমীমাংসা নামে খ্যাত। ভবিষ্যতে বিশপরা সরকার কর্তৃক মনোনীত হবেন এবং পোপ তাদের নিয়োগ অনুমোদন করবেন। যাজকরা সরকারের কাছে আনুগত্যের শপথ নেবেন। সরকার বিশপ এবং যাজকদের বৃত্তিদান করবে।


শিক্ষা সংস্কার : নেপোলিয়ন শিক্ষা ব্যবস্থারও ব্যাপক সংস্কার করেন। জাতির মধ্যে শিক্ষা বিস্তার রাষ্ট্রের কর্তব্য বলে গৃহীত হয়। তবে প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তারে নেপোলিয়ন বেশী আগ্রহী ছিলেন না। মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার উন্নতি ও প্রসার ছিল তাঁর লক্ষ্য। আধাসামরিক ভিত্তিতে তিনি ২৯ টি লাইসী বা মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন। কারিগরী বিদ্যা শিক্ষার জন্য পলিটেকনিক ও শিক্ষক-শিক্ষণ বা আইন বিদ্যালয়ও স্থাপিত হয়। ইউনিভার্সিটি অব্ ফ্রান্স প্রতিষ্ঠা করে তার উপর শিক্ষা ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ ভার দেওয়া হয়। এই শিক্ষা সংস্কারের প্রধান ত্রুটি ছিল যে প্রাথমিক শিক্ষা অবহেলিত হওয়ার ফলে সাধারণ মানুষ শিক্ষা লাভে বঞ্চিত হয়েছিল এবং শিক্ষার সুযোগ কেবলমাত্র উচ্চবিত্তদের কাছেই উন্মুক্ত ছিল।


জনহিতকর কাজ : নেপোলিয়ন বেশ কিছু জনহিতকর কাজও করেন। তিনি রাষ্ট্রের প্রতি সেবা ও আনুগত্যের স্বীকৃতি স্বরূপ 'লিজিয়ন অব্ অনার' নামক উপাধিদানের ব্যবস্থা করেন। এছাড়া বহু রাস্তাঘাট ও সেতু নির্মাণ করেন। আল্পস পর্বতের গিরিপথ দিয়ে দুটি রাস্তা পরিণত করেন। তাঁর উদ্যোগে বহু উদ্যান ও প্রাসাদ নির্মিত হয়।


মূল্যায়ণ : নেপোলিয়নের উত্থান কালক্রমে ফ্রান্সে স্বৈরাচারী রাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করলেও তার সামাজিক ও প্রশাসনিক সংস্কারগুলি ছিল বিপ্লবী উদারতার আদর্শে রঞ্জিত। তিনি বিপ্লবের দুটি প্রধান আদর্শ সাম্যও মৈত্রীর প্রতি আস্থাশীল ছিলেন। প্রতিক্রিয়াশীল সামন্ততন্ত্রের শোষণ থেকে জনগণকে মুক্ত করার উদ্দেশ্যেই তাঁর সংস্কারগুলি রচিত ও রূপায়িত হয়েছিল, এ বিষয়ে সন্দেহ নেই । এই সংস্কারগুলি কেবলমাত্র ফ্রান্সের পুনরুজ্জীবন ঘটায়নি, সমগ্র ইউরোপে সামাজিক বিন্যাসের পথ প্রশস্ত করে। ডেভিড টমসনের মতে, নেপোলিয়ন ফ্রান্সকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে শান্তি স্থাপন করেন। বিপ্লব পরবর্তী অস্থিরতা নেপোলিয়নের প্রতিভার যাদুস্পর্শে শান্তি ও সমৃদ্ধির ভিত্তি রচনা করে। আইন বিধির সংস্কার করে তিনি বৈপ্লবিক আইনসমূহকে স্থায়িত্ব দান করেন। নিয়োগের ক্ষেত্রে রক্তের পরিবর্তে যোগ্যতার স্বীকৃতি বিপ্লবী ফ্রান্সের বিরাট শূন্যতাকে পূরণ করে। ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি নেপোলিয়নের প্রচেষ্টায় সদৃঢ় ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে । এই কারণে ফিশার মন্তব্য করেছেন" নেপোলিয়নের সাম্রাজ্য স্থায়ী না হলেও তাঁর অসামরিক সংস্কারগুলি গ্রানাইট পাথরের ভিত্তির উপর স্থায়ীভাবে নির্মিত হয়েছে। তাই বলা চলে সামান্য ত্রুটি বিচ্যুতি হলেও নেপোলিয়নের সংস্কারগুলি বিপ্লবী ভাবধারায় সঙ্গতিপূর্ণ ছিল।

>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>

 মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা বলতে কি বোঝ ? নেপোলিয়নের পতনের জন্য এই ব্যবস্থা কতখানি দায়ী ছিল ?

অথবা, মহাদেশীয় অবরোধ প্রথা ব্যর্থ হয় কেন ?


ভূমিকা : নেপোলিয়ন ব্রিটেন অর্থাৎ ইংল্যান্ডকে তাঁর প্রধান শত্রু বলে মনে করতেন। তাঁর বাসনা ছিল যে কিভাবে ইংল্যান্ডকে ধ্বংস করা যায়। বিশেষ করে এই ভাবনা তাঁর কাছে গভীরভাবে দেখা দিয়েছিল। 'এ্যামিয়েন্সের সন্ধি' যখন অমান্য করা হয়, নেপোলিয়ন তখন বুঝতে পেরেছিলেন যে ফ্রান্সের নৌশক্তি ইংল্যান্ডের মোকাবিলা করতে পারবে না। এজন্য তিনি অন্য পন্থার কথা ভাবছিলেন। তিনি ১৮০৫ সালে তাঁর আস্থাভাজন সমরনায়ক মন্টজেলার্ডকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। মন্ট জেলার্ড তাঁর রিপোর্টে ইংল্যান্ডকে অর্থনৈতিক অবরোধের দ্বারা ধ্বংসের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এই অর্থনৈতিক অবরোধ ব্যবস্থা মার্কেনটাইল মতবাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়, অর্থাৎ আমদানী কমানো এবং রপ্তানী বাড়ানো। ফ্রান্স যদি ইংল্যান্ডের থেকে মাল আমদানী কমিয়ে দেয় অবরোধের মাধ্যমে, তাহলে শেষ পর্যন্ত ফ্রান্সই লাভবান হবে। তবে নেপোলিয়নের সময়ের অনেক আগেই মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থার সূত্রপাতের কথা চিন্তা করা হয়েছিল। নেপোলিয়ন এ ব্যবস্থা কেবলমাত্র ব্যাপক ভাবে প্রয়োগের ব্যবস্থা করেন।


অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য অপেক্ষা সামরিক উদ্দেশ্য : নেপোলিয়ন এই অবরোধ ব্যবস্থা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে গ্রহণ করেছিলেন তার শুধুমাত্র রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল তা নয়, এর জন্য সামরিক উদ্দেশ্যও দায়ী ছিল। আলফ্রেড কোরাণের মতে নেপোলিয়ন মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থার মাধ্যমে ইংল্যান্ডকে রাজনৈতিক ও সামাজিক দিক থেকে পর্যুদস্ত করতে চেয়েছিলেন। আর ফ্রান্সের রপ্তানী বৃদ্ধির ফলে ফ্রান্স সম্পদশালী হয়ে উঠবে। এছাড়া এই সময় নেপোলিয়ন ১৮০৬-১৮০৭ সালে রাশিয়ার সঙ্গে টিলজিটের সন্ধির দ্বারা রাশিয়া ও অস্ট্রিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করেছিলেন। রাশিয়ার সহযোগিতা পেলে তিনি বাল্টিক ও অস্ট্রিয়ার সহযোগিতায় অ্যাড্রিয়াটিক উপকূলে ব্রিটিশ বাণিজ্যকে আঘাত দিতে পারবেন।


অর্থনৈতিক আবরোধ জারী : নেপোলিয়ন বেশ কয়েকটি ঘোষণার দ্বারা এই অবরোধ চালু করেন। ১৮০৬ সালে বার্লিন ডিক্রি প্রথমে জারী করা হয়। এই ঘোষণায় বলা হয়েছিল যে, প্রথমতঃ ইংল্যান্ডের কোন জাহাজ কোন দ্রব্য ফ্রান্সের বন্দরে নামাতে বা তুলতে পারবে না। দ্বিতীয়তঃ যদি ইংল্যাণ্ডের কোন মাল অন্য দেশের মারফৎ এই সমস্ত বন্দরে নামে তাহলে সেগুলি বাজেয়াপ্ত করা হবে।


অডারস-ইন-কাউন্সিল : এর প্রত্যুত্তরে ইংল্যান্ড ফ্রান্সের বিরুদ্ধে অডারস-ইন-কাউন্সিল জারী করেছিল। এই ঘোষণায় ইংল্যান্ড বলেছিল যে ফ্রান্স বা তার কোন মিত্র রাষ্ট্র ইংল্যান্ডের বন্দরে মাল নামাতে পারবে না। এই ঘোষণা ভঙ্গ করা হলে সেই জাহাজগুলির মাল বাজেয়াপ্ত করা হবে। দ্বিতীয়তঃ যদি কোন জাহাজ  ইতিহাস (সেমেস্টার .. নিতান্তই ফ্রান্সের কোন বন্দরে মাল নামাতে চায় তাহলে তাদের ইংল্যান্ডের কোন বন্দরের মাধ্যমে আসতে হবে।


নেপোলিয়নের মিলান ও ওয়ারস ঘোষণা জারী : নেপোলিয়ন ইংল্যান্ডের এই ঘোষণার উত্তরে মিলান ও ওয়ারস ডিক্রী জারী করেন। তারপর ফন্টেন বু ঘোষণাও জারী করা হয়। এই ঘোষণায় বলা হয় যে ইংল্যান্ডের মাল ধরা পড়লে তা প্রকাশ্য রাজপথে পোড়ানো হবে। এই ডিক্রীগুলি বা ঘোষণাগুলি সামগ্রিক ব্যবস্থাকে মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা বা কন্টিনেন্টাল সিস্টেম বলা হয়।


সাফল্য লাভ করেছিল, কারণ ১৮০৮ সাল নাগাদ ব্রিটেনের রপ্তানী বাণিজ্য যথেষ্ট হ্রাস পেয়েছিল। সেখানে আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছিল এবং ১৮০৮-১৮১১ সালের মধ্যে ইংল্যান্ড প্রবল আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছিল। তবে অনেকে মনে করেন যে এই সংকট ইংল্যান্ডে গভীর রেখাপাত করতে সক্ষম হয়নি । যদি ইংল্যান্ডের অনেক মাল গুদামে পচে নষ্ট হয়। লাড়াইটদের বিদ্রোহ দেখা দেয়, ব্রিটেনের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক তিক্ত হয় এবং যদিও অনাবৃষ্টির ফলে ইংল্যান্ডের ফসল উৎপাদন হ্রাস পায়, এ সময় নেপোলিয়ন একটা বড় ভুল করেছিলেন। তিনি ফ্রান্স থেকে ইংল্যান্ডে খাদ্যশস্য রপ্তানী করে ইংল্যান্ডের সঞ্চিত অর্থ গ্রাস করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এ সুযোগে তিনি ইংল্যান্ডকে নতজানু করতে না পেরে মহাভুলের পরিচয় দিয়েছিলেন। এ সুযোগ আর আসেনি।


ইংল্যান্ড ছাড়া ফ্রান্সেও সংকট সৃষ্টি : একথা অনস্বীকার্য যে মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা শুধুমাত্র ইংল্যান্ডে ১৮০৮-১৮১১ সালের মধ্যে অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি করেছিল তা নয়, ফ্রান্সেও অর্থনৈতিক অবরোধের সংকট দেখা দিয়েছিল। বিভিন্ন লকারখানায় হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে গিয়েছিল। জ্যাকোবিন জনতা সংহার মূর্তি ধারণ করেছিল। লায়াস অঞ্চলে প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিকের মধ্যে ২০ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছিল। তারপর ব্রিটেন অচিরেই তার অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠেছিল। বাল্টিক সমুদ্র উপকূলে বাণিজ্যে কোন ক্ষতি হয়নি। ফ্রান্সের নৌ বলের অভাবের জন্য চোরা পথে মাল ব্রিটেনে প্রবেশ করেছিল। জিব্রাল্টার, হেলিগোল্যাণ্ড, বেলিয়ালিক দ্বীপপুঞ্জ প্রভৃতি অঞ্চল থেকে মাল চোরা পথে ইউরোপে প্রবেশ করছিল। এরূপ পরিস্থিতিতে নেপোলিয়ন মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা শিথিল করতে বাধ্য হন। ব্রিটেনের বাজেয়াপ্ত দ্রব্য জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেগুলি ছিল অপ্রয়োজনীয় এমনকি তিনি ফরাসী সৈন্য বাহিনীর জন্য জুতো, জামা ও পোষাক গোপনে ইংল্যান্ড থেকে ক্রয় করেন।


লাইসেন্স প্রথার প্রবর্তন: যখন নেপোলিয়ন দেখলেন যে আমদানী সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা সম্ভব নয়, তখন তিনি আমদানীকারী দেশগুলিকে লাইসেন্স দিতে শুরু করেন। লাইসেন্স প্রথা তাঁর পরোক্ষভাবে ব্যর্থতার পরিচয়।


ফ্রান্সের স্বার্থরক্ষা প্রধান উদ্দেশ্য : ইউরোপ নয় নেপোলিয়নের এই অর্থনৈতিক অবরোধ ব্যবস্থাকে অনেকে এইভাবে ব্যাখ্যা করেছেন যে, তাঁর আসল উদ্দেশ্য ছিল যে, ইংল্যান্ডকে বাদ দিয়ে ইউরোপে ফ্রান্সের নেতৃত্বে একটি অর্থনৈতিক সংগঠন বা জোট গড়ে তোলা। তবে এ বিষয়ে বিতর্ক আছে। তিনি এই অর্থনৈতিক অবরোধকে তাঁর রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। দ্বিতীয়তঃ তাঁর দৃষ্টিতে ফ্রান্সের স্বার্থই ছিল প্রধান এবং লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে তিনি ফরাসী বণিকদেরই বিশেষ সুবিধা দিয়েছিলেন। ফ্রান্সের এই দাবী প্রধান রূপে দেখার ফলে অচিরেই অন্যান্য দেশ যেমন রাশিয়া,অষ্ট্রিয়া ক্রুদ্ধ হয় এবং অবরোধ প্রথা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তাঁরা তাদের বন্দর ইংল্যান্ডের বাণিজ্য জাহাজের কাছে উন্মুক্ত করে দিয়েছিল।. 



ফ্রান্সের বিরুদ্ধে স্বদেশে বিরোধিতা : অর্থনৈতিক অবরোধ ব্যবস্থা কার্যকরী করতে গিয়ে নেপোলিয়নকে বিরাট ব্যায়ের সম্মুখীন হতে হয়। ফ্রান্স ছিল প্রধাণতঃ কৃষিপ্রধান দেশ এবং শিল্পের অগ্রগতিও ছিল তখন অত্যন্ত শ্লথ। তিনি বণিক ও শিল্পপতিদের উপর কর আরোপ করেন। তাঁরাও অসন্তুষ্ট হন। নেপোলিয়ন ইংল্যান্ডের মাল কফির বদলে ফ্রান্সে চিকোরী, আখের চিনির জায়গায় বীটের চিনি প্রভৃতি চালু করেন। ফলে স্বদেশে এবং বিদেশে নেপোলিয়ন প্রচণ্ড সমালোচনার সম্মুখীন হন।


মরীয়া নেপোলিয়ন : এরূপ পরিস্থিতিতে নেপোলিয়ন মরীয়া হয়ে ওঠে এবং নৌ বাহিনী দিয়ে যা করা সম্ভব ছিল তা তিনি স্থল বাহিনীর মাধ্যমে করতে অগ্রসর হন। অর্থাৎ স্থল সেনাবাহিনী দিয়ে বিভিন্ন ইউরোপীয় এবং নিরপেক্ষ দেশগুলিতে তাঁর অবরোধ ব্যবস্থা কার্যকরী করতে সচেষ্ট হন। কিন্তু এ ব্যাপারে অন্যতম সীমাবদ্ধতা ছিল যে নদীপথে মাল পরিবহনের ব্যয় অনেক কম ছিল, স্থলপথ দিয়ে তা অনেক বেশি ছিল। তিনি ইতালীর উপর শুল্ক প্রাচীর আরোপ করেন। ইতালী ক্ষুব্ধ হয়। রাইন, পিডমন্ট অঞ্চলে চড়া হারে শুল্ক আদায় করতে থাকেন। স্পেনে ও পর্তুগালে প্রচুর সেনাবাহিনীর অনুপ্রবেশ ঘটান। স্পেনের সিংহাসনে নিজ ভ্রাতা যোসেফকে বসান। ফলে স্পেনে প্রকৃতপক্ষে গণযুদ্ধ শুরু হয় এবং তা দীর্ঘকালীন হয়। পোপের রাজ্য আক্রমণ করেন ও দখল করেন। রাশিয়া, অস্ট্রিয়া অসন্তুষ্ট হয়ে অবরোধ | প্রথা অগ্রাহ্য করতে শুরু করে। ক্রমে ক্রমে নেপোলিয়ন মিত্রহীন হয়ে পড়েন। ১৮১২ সালে তিনি রাশিয়া আক্রমণ করেন। এটা তাঁর এক মারাত্মক ভুল। কারণ ইতিমধ্যে স্পেনে তাঁর বিশাল সৈন্যবাহিনী প্রেরণ করা হয়েছে। রাশিয়ার অভিযানে ব্যর্থতা ছাড়াও সৈন্যবাহিনীর যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল, তা তিনি পূরণ করতে পারেন নি।


উপসংহার : এইভাবে নেপোলিয়নের সাম্রাজ্যবাদনীতি মহাদেশীয় অবরোধ প্রথার ব্যর্থতা শেষ পর্যন্ত অন্যান্য কারণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তাঁর পতনকে অনিবার্য করে তুলেছিল।



>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>

বাংলার ইতিহাসে ইলিয়াস শাহি শাসনকালের গুরুত্ব লেখো।

বাংলার ইতিহাসে ইলিয়াস শাহি শাসনকালের গুরুত্ব
>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>

সূচনা 
| দিল্লির সুলতানি শাসনের দুর্বলতার সুযোগে সাম্সউদ্দিন ইলিয়াস শাহ বাংলায় স্বাধীন সুলতানি শাসন প্রতিষ্ঠা করেন যা, ইলিয়াস শাহি শাসন' নামে পরিচিত। ১৩৪২ খ্রিস্টাব্দ থেকে শুরু করে ইলিয়াস শাহি শাসন প্রায় দেড়শো বছর বাংলায় স্থায়ী ছিল। এই সময়কালে ইলিয়াস শাহ ছাড়াও সিকান্দার শাহ, গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ, বরবক শাহ প্রমুখ দক্ষ সুলতান বাংলায় রাজত্ব করেছিলেন। তাঁদের আমলে বাংলার রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক প্রভৃতি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লক্ষ করা যায়, যা ইলিয়াস শাহি বংশের শাসনকালকে ইতিহাসে স্মরণীয় করে রেখেছে।

রাজনৈতিক গুরুত্ব

ইলিয়াস শাহি বংশের সুলতানরা দিল্লির সুলতানি শাসনকালে বাংলায় স্বাধীন রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন, যা রাজনৈতিক দিক থেকে ছিল খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এ ছাড়া ইলিয়াস শাহি বংশের বিভিন্ন সুলতান যুদ্ধজয়ের মাধ্যমে বাংলায় তাদের সাম্রাজ্যের সীমানা বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত করেন। এই সময় উত্তর বিহার, বারাণসী, চম্পারন, গোরক্ষপুর প্রভৃতি অঞ্চলে বাংলার প্রাধান্য স্থাপিত হয়েছিল। এ ছাড়া উড়িষ্যা, কামরূপ ও পূর্ববঙ্গ ইলিয়াস শাহি সুলতানদের অধীনে এসেছিল। এই সময় চিন, পারস্য প্রভৃতি দেশের সঙ্গে বাংলার সুসম্পর্ক স্থাপিত হয়।

আর্থিক উন্নতি

ইলিয়াস শাহি সুলতানদের আমলে বাংলায় শান্তিশৃঙ্খলা স্থাপিত হওয়ার ফলে অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটে। বিখ্যাত পর্যটক ইবন বতুতা তাঁর রচনায় বাংলার উন্নত কৃষিব্যবস্থার বর্ণনা দিয়েছেন। কৃষিকে কেন্দ্র করে বাংলার শিল্প ও বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছিল।

ধর্মীয় সমন্বয় নীতি

ইলিয়াস শাহি যুগে বাংলায় হিন্দু ও মুসলিম ধর্মের মধ্যে সমন্বয়ের চিত্র ধরা পড়ে। সুলতানরা ধর্ম নিরপেক্ষভাবে শাসন পরিচালনা করতেন। ইলিয়াস শাহ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর বহু গুরুত্বপূর্ণ পদে যোগ্য হিন্দুদের নিয়োগ করেছিলেন। গ্রামীণ শাসন ও রাজস্বব্যবস্থায় হিন্দু জমিদারদের প্রাধান্য এযুগে বজায় ছিল। এর ফলে হিন্দু জমিদার ও গ্রামপ্রধানরা ইলিয়াস শাহি যুগে সমৃদ্ধ হয়েছিল।

ইসলাম ধর্মের বিস্তার

বাংলায় ইসলাম ধর্ম বিস্তারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সময় ছিল ইলিয়াস শাহি যুগ। এযুগে একদিকে যেমন মুসলিম ধর্মগুরুরা ইসলাম ধর্মের প্রচার চালিয়েছিলেন তেমনই বহু সুফিসপ্ত ইসলামের আদর্শ জনসাধারণের সামনে তুলে ধরেছিলেন। তা ছাড়া সুলতানদের আনুকূল্যে এই সময় বহু মসজিদ ও মাদ্রাসা গড়ে উঠেছিল। ইসলাম ধর্মের সাম্য ও শান্তির চিন্তাধারা বাংলার নির্যাতিত নিম্নবর্ণের মানুষদের আকৃষ্ট করেছিল। ফলে বহু নিম্নবর্ণের হিন্দু ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিল।

ভাষা ও সাহিত্যের উন্নতি

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশের ক্ষেত্রে ইলিয়াস শাহি বংশের শাসনকাল বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে আছে। এযুগে বাংলা ভাষা চর্যাপদের যুগ অতিক্রম করেছিল | ইলিয়াস শাহি সুলতানদের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা ভাষায় বহু কাব্য রচিত হয়েছিল। বৃহস্পতি মিশ্র, কৃত্তিবাস ওঝা, মালাধর বসু, চণ্ডীদাস, বিদ্যাপতি, বিজয় গুপ্ত প্রমুখ এই যুগেই আবির্ভূত হয়েছিলেন। এই যুগেই মালাধর বসু শ্রীকৃষ্ণবিজয় কাব্য রচনা করেছিলেন। এই অমর সৃষ্টির জন্য বরবক শাহ তাঁকে গুগরাজ খাঁ উপাধি প্রদান করেছিলেন। এই সময়ে কৃত্তিবাস ওঝার রামায়ণ, বিদ্যাপতির পদাবলি সাহিত্য, চণ্ডীদাসের রচনা, বিজয় গুপ্তের মনসামঙ্গল কাবা প্রভৃতি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছিল। শিক্ষার উন্নতির জন্য এযুগে বহু মাদ্রাসা ও মক্তব গড়ে উঠেছিল।

শিল্প ও স্থাপত্যের বিকাশ

শিল্প ও স্থাপত্যকর্মের বিকাশেও ইলিয়াস শাহি বংশের শাসনকাল ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এযুগে বহু বিখ্যাত স্থাপত্যকর্ম গড়ে উঠেছিল। সিকান্দার শাহের আমলে ১৩৬৮ খ্রিস্টাব্দে পাণ্ডুয়ায় বিখ্যাত আদিনা মসজিদ নির্মিত হয়েছিল। দামাস্কাসের মসজিদের অনুকরণে তৈরি এই মসজিদটি ছিল সেযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ স্থাপত্য। তা ছাড়া এযুগে নির্মিত কোতোয়ালি দরওয়াজা, একলাখি মসজিদ, জামি মসজিদ, হুগলির লোটন মসজিদ প্রভৃতি ছিল গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য। বরবক শাহের আমলে নির্মিত গৌড়ের বিখ্যাত দাখিল দরওয়াজা স্থাপত্যের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য কীর্তি।

উপসংহার | 
ওপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, ইলিয়াস শাহি যুগে বাংলা যেমন শান্তি ও সমৃদ্ধি লাভ করেছিল তেমনই সাম্রাজ্যের বিস্তার এবং সাহিত্য-সংস্কৃতির অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটেছিল।





উত্তরের জন্য নীচের লিংকে click করো 


**** যদি কোন ভুল থেকে থাকে তবে তা   Typing mistake এর জন্য ।   আমাদের  comment   করে জানান  আমরা তা সংশোধন করে দেবার চেষ্টা করবো ****

বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবেশ বিদ্যা একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ও আবশ্যিক  বিষয় । সেই প্রাথমিক স্তর থেকে মাধ্যমিক , উচ্চিমাধ্যমিক , স্নাতক , স্নাতকত্তর এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষা যেমন WBCS , PSC , SSC , UPSC , WBP , Primary TET , SET , NET  প্রভৃতি ক্ষেত্রে পরিবেশ বিদ্যা একটি অতি গুরুত্ব পূর্ন বিষয় । 

তাই এই সবের কথা মাথায় রেখে আমরা  বাংলার শিক্ষা  e-Portal  এর সাহায্যে   সমস্ত শিক্ষার্থী দের কাছে এই সমস্ত বিষয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর ও সকল বিষয়ে  Online Exam   Practice এর ব্যবস্থা করার চেষ্টা করবো । 

এখানে মাধ্যমিকের মাধ্যমিক বাংলা , মাধ্যমিক ইংরেজী , মাধ্যমিক গণিত , মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান ও পরিবেশ , মাধ্যমিক ভৌত বিজ্ঞান ও পরিবেশ , মাধ্যমিক ইতিহাস ও পরিবেশ , মাধ্যমিক ভূগোল ও পরিবেশ  , উচ্চ-মাধ্যমিক এর   ( একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেনীর  ) বাংলা  , ইংরেজী , ভূগোল , শিক্ষা-বিজ্ঞান , দর্শন , রাষ্ট্র বিজ্ঞান , পরিবেশ পরিচয় , পুষ্টি বিজ্ঞান , সংস্কৃত ,  ইতিহাস ,  , স্নাতক ( জেনারেল )  কম্পালসারি বাংলা , কম্পালসারি ইংরেজী , কম্পালসারি পরিবেশ , বাংলা ( সাধারন ) , শিক্ষা বিজ্ঞান , দর্শন , ইতিহাস , ভূগোল , সমাজবিদ্যা , Physical Education ,  প্রভৃতির সমস্ত বিষয়ের প্রয়োজনীয় প্রশ্ন , সালের প্রশ্ন ও তার যথাযথ উত্তরসহ , এবং Online  পরীক্ষা অভ্যাসের সুযোগ থাকবে । 

Calcutta University  Under CBCS ( system ) , Semester (II) History General  , BA 2nd Semester ( History General ) Suggestions . 

 


No comments

Featured Post

Semester 2 History Suggestions - Questions Set-1 -স্নাতক ইতিহাস || History General Semester 2 - || History Suggestion for 2nd Semester of Calcutta University under CBCS System

   History  Suggestion for 2nd Semester of Calcutta University under CBCS System  History   Suggestions( BA General )  with Answer  Semester...

Powered by Blogger.